পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা হাট-বাজারগুলোতে মানসিক ভারসাম্যহীন অসংখ্য রোগী ঘুরে বেড়াচ্ছে, যাদের বেশিরভাগই পরিচয়হীন। স্থানীয়রা দাবি করছেন, এসব পাগল ভারতীয় নাগরিক, এবং তাদের দ্বারা রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সীমান্তবর্তী হাট-বাজারগুলোতে এসব মানসিক রোগী প্রায়ই ঘোরাফেরা করছে। তাদের শরীর থেকে বের হচ্ছে দুর্গন্ধ এবং পরনে পুরোনো ও ময়লা কাপড়। তেঁতুলিয়া উপজেলায় ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর রয়েছে, যেখানে এসব মানসিক রোগীদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দোকান বা রাস্তার পাশে তারা বসে, দাঁড়িয়ে বা ঘুরে বেড়াচ্ছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, বেশিরভাগ মানসিক রোগীর ভাষা এবং দৈহিক গঠন দেখে তারা ভারতীয় নাগরিক বলে মনে হয়। তাদের অনেকেই বিষয়ভিত্তিক কথা বললেও ভাষা দুর্বোধ্য। দোকান বা স্থানীয় মানুষজন তাদের খাবার সরবরাহ করছে, তবে কেউ তাদের কোনো পরিচয় জানে না।
স্থানীয়রা মনে করেন, ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী (বিএসএফ) কৌশলে এই মানসিক রোগীদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এদের দ্বারা সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থলবন্দরের শ্রমিকরা বলেন, এই রোগী সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, এবং অন্তত আট থেকে ১০ জন অপরিচিত মানসিক রোগী প্রায়ই বাজারে দেখা যাচ্ছে। তারা এক বা দুইদিনের মধ্যে হারিয়ে যাচ্ছে, তারপর আবার নতুন মানসিক রোগী আসছে। বিশেষ করে সীপাহীপাড়া বাজার, তীরনইহাট বাজার, শালবাহান হাট এবং তেঁতুলিয়া শহর এলাকায় এই মানসিক রোগীদের উপস্থিতি বেশি।
স্থানীয় পরিবেশ কর্মীরা জানান, এসব মানসিক রোগী ভারতের নাগরিক হতে পারে এবং তারা পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি করছে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) পঞ্চগড় জেলার সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম খায়ের বলেন, “এটি অমানবিক এবং অস্থির পরিস্থিতি। এসব রোগী ভারতীয় হতে পারে, তবে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি আমাদের সমাজে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সরকারকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।”
স্থানীয় ব্যবসায়ী মামুন হোসেন বলেন, “এদের অবস্থা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে আমাদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হচ্ছে, এদের দ্বারা কোনো সংক্রামক রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।”
সরকারের উদ্যোগের দাবি জানিয়ে, স্থানীয়রা মনে করছেন এসব মানসিক রোগী দ্রুত সুরক্ষিত ও পরিচয় শনাক্ত করার প্রক্রিয়ায় আনা উচিত, যাতে তাদের জন্য একটি সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করা যায় এবং পরিবেশে রোগবালাই না ছড়ায়।